পৃষ্ঠাসমূহ

বৃহস্পতিবার, ২৪ মে, ২০১২

অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে আবারও বিচার-বহির্ভূত হত্যা


বাংলাদেশ সরকার বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের অঙ্গীকার করলেও তা অব্যাহত রয়েছে। গত বছর র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব) ৫৪টিরও বেশি বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং যার কোনটিরই স্বাধীন তদন্ত কিংবা বিচার হয়নি। এমন অভিযোগ তুলেছে অ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল।
লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ২০১২ সালের মানবাধিকার-বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। ২৩ মে, বুধবার এই প্রতিবেদন তাদের ওয়েবসাইটে বলা হয়, সহিংসতার শিকার নারীদের সহায়তা দেওয়ার নতুন নীতি বাস্তবায়নেও সরকার ব্যর্থ বলে দাবি করা হয় প্রতিবেদনে। বাংলাদেশে বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বিষয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, র‌্যাব ২০১১ সালে কমপক্ষে ৫৪ ব্যক্তিকে হত্যা করেছে। ২০০৪ সালে র‌্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকে শুরু করে হিসাব করলে এ ধরনের হত্যার সংখ্যা দাঁড়ায় সাত শতাধিক। অনেককেই আহত ও নির্যাতন করেছে। অনেক ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা সংস্থাটিকে বলেছে, র‌্যাব গ্রেপ্তার করার পর তাঁদের স্বজন মারা গেছে। র‌্যাবের দাবি অনুযায়ী এনকাউন্টারে মারা যায়নি।
এ ধরনের বিচার-বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের উদাহরণ হিসেবে র‌্যাবের গুলিতে পা হারানো ঝালকাঠির কলেজছাত্র লিমনের ঘটনা উল্লেখ করেছে অ্যামনেস্টি।
আদিবাসীদের জীবিকা ও ভূমি অধিকার রক্ষায় সরকার ব্যর্থ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে অ্যামনেস্টি। প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের ফলে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা কমলেও তা পুরোপুরি দূর হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের জীবন ও ভূমির অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। গত বছর ৪৯ ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে এবং কমপক্ষে পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
এ ছাড়া গত বছর পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের শিকার হয়ে কমপক্ষে তিন ব্যক্তি মারা গেছে। এ ঘটনার পর সরকার দোষীদের বিচারের আওতায় আনার ঘোষণা দেয়। তবে গত বছরের শেষ নাগাদ কাউকে বিচারে দাঁড় করানো হয়নি। পুলিশ, র‌্যাব বা অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী হাজার হাজার ব্যক্তিকে তাদের হেফাজতে নির্যাতন করছে বলে অভিযোগ থাকলেও সরকার তাদের বিচারের আওতায় আনার অঙ্গীকার করেনি।
প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটির মহাসচিব সলিল শেঠি বলেন, গত এক বছর বিশ্ব নেতারা ব্যর্থ হয়েছেন। রাজনীতিবিদেরা সাধারণ মানুষের প্রতিবাদের জবাব দিয়েছেন নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতা দিয়ে। সরকারে অবশ্যই বৈধ নেতৃত্ব থাকবে। ক্ষমতাহীন ব্যক্তিদের রক্ষা ও ক্ষমতাধরদের প্রতিরোধ করে অবিচারকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে। ব্যবসার আগে মানুষকে স্থান দেওয়া ও মুনাফার আগে অধিকার নিশ্চিত করার এটাই সময়।
সংগ্রহ ও সম্পাদনা: পান্থ রহমান

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন