পৃষ্ঠাসমূহ

শুক্রবার, ২৭ জুলাই, ২০১২

নেপালের সঙ্গে মুদ্রা বিনিময় নিয়ে আলোচনা

২৬ জুলাই, ঢাকা:
বিদেশি মুদ্রার মজুদ ঠিক রাখা এবং চাপ কমাতেই সরাসরি টাকা ও রুপির বিনিময় ব্যবস্থা চালুর আলোচনা হচ্ছে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে। খুব দ্রুতই বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা হবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন; দক্ষিণ এশিয়ার সাতটি দেশের সংগঠন সার্ক-এর আওতায় চেষ্টা চলছে একটি আঞ্চলিক মুদ্রা বিনিময় পদ্ধতি খুঁজে বের করার। সেই বিষয়টি বিবেচনাধীন আছে। তবে এর আগেই ঢাকা ও কাঠমান্ডু দ্বিপক্ষীয়ভাবে নিজেদের মধ্যে মুদ্রা বিনিময়ের কাজটি শুরু করবে।”

বিষয়টি আজ শনিবার নেপালে সচিব পর্যায়ের বৈঠকে উঠতে পারে বলে জানান তিনি। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে অংশ নেবেন বাণিজ্য সচিব গোলাম হোসেন; তিনি নেপালের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। উদাহরণ হিসেবে ওই কর্মকর্তা জানান; ভারতের রুপি নেপালের যে কোন জায়গায় চলে এবং সমমান নিয়েই চলে। কেউ ভারতীয় রুপি নিয়ে নেপালে গেলে সেখানে হোটেলে থাকতেও ওই রুপি দিয়েই কাজ চালানো যায়। বাংলাদেশ তেমনই একটি চুক্তি করতে চায় যেখানে নেপাল গেলে বাংলাদেশের টাকা দিয়ে কাজ চালানো যাবে। এতে করে বাণিজ্য ঘাটতিও কমবে বলে জানান তিনি।

বাণিজ্য মন্ত্রনালয় সূত্র জানিয়েছে; প্রতি বছর প্রায় হাজার ত্রিশেক বাংলাদেশি পর্যটক নেপালে বেড়াতে যান; সেখানে বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করেন। এছাড়াও ২০১০-২০১১ অর্থবছরে বাংলাদেশ, নেপালে ১৩ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। নেপাল থেকে আমদানি করেছে ৫০ লাখ ডলারের পণ্য। ফলে সেই বিবেচনায় বাংলাদেশ নেপালের সঙ্গে অর্থ বিনিময়ের চুক্তিতে গেলে লাভবান হবে বলেই মনে করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের ওই কর্মকর্তা।

উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ ছাড়াও খাদ্যপণ্য, তৈরি পোশাক, টিস্যু, ইলেক্ট্রিক্যাল পণ্য, ওষুধ ইত্যাদি পণ্যের ওপর শুল্ক হার পাঁচ শতাংশে নামিয়ে আনার চিন্তাও চলছে বলে জানা গেছে বাণিজ্যমন্ত্রনালয় সূত্রে। কাঠমান্ডু শাকসবজি ও ফলমূলের ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুবিধা চায়। আর তার বিনিময়ে নেপাল কৃষিপণ্য, মাছ ও অন্যান্য পণ্যে বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়ার কথা জানিয়েছে। ভুটানকে বাংলাদেশ অগ্রাধিকার বাণিজ্য সুবিধা দিয়েছে আর সেই সুবিধা নিয়ে অনেক নেপালি পণ্য থিম্পু হয়ে ঢাকায় ঢুকছে।

বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের ওই সূত্র জানিয়েছে; ভারত হয়ে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে সরাসরি বাস সার্ভিস চালুর কথাও চিন্তা করছে দুই দেশ। বাংলাদেশ বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। এরই মধ্রে কাঠমান্ডু বাস সার্ভিস চালুর জন্য একটি চুক্তিরও খসড়া করা হয়েছে এবং তা নেপালের সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
তিনি জানান, “দ্রুতই চুক্তিটি চূড়ান্ত হবে।”

এর বাইরে কাঠমান্ডু থেকে ভারত হয়ে জলবিদ্যুৎ আমদানি নিয়ে বাংলাদেশ নেপালের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ও উপ-আঞ্চলিকভাবে কাজ করছে।

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে দুই দেশের পররাষ্ট্র দপ্তরের মধ্যে নিয়মিত বৈঠক আয়োজনের কথাও ঠিক হয়েছে। আগামী ৩০ জুলাই নেপালের পররাষ্ট্র সচিব দূর্গা প্রসাদ ভট্টরাই ঢাকায় এসে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করবেন।
পান্থ রহমান। ঢাকা, বাংলাদেশ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন