পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
অর্থায়নের সুযোগ সীমিত, তবে অসম্ভব নয়
পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুযোগ
সীমিত বলে জানিয়ে দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলছে, ‘এটি অসম্ভব নয়। তবে এ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার খুব সীমিত সুযোগ
রয়েছে। অন্যান্য
দেশে বাতিল করা ঋণ পুনরায় চালু করার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের মাত্র কয়েকটি নজির রয়েছে।’
পদ্মা সেতুর বেলায় সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুযোগ সীমিত হওয়ার
কারণ সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক বলেছে, দুর্নীতি প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাবিত চারটি পদক্ষেপের
মধ্যে দুটি পদক্ষেপের ব্যাপারে সরকার ইতিবাচক সাড়া দিতে পারেনি। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। আজ মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংকের
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
‘পদ্মা
সেতু প্রকল্প বাতিল-সংক্রান্ত প্রশ্ন-উত্তর’ শিরোনামে পাঠানো বিশ্বব্যাংকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ১২টি উপশিরোনামে
অর্থায়ন বন্ধের পর উত্থাপিত বিভিন্ন প্রশ্নে সংস্থাটির অবস্থান ব্যাখা করা হয়েছে। এতে বিশ্বব্যাংক বলছে, নিজস্ব নীতি অনুসারে
বিশ্বব্যাংক ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এবং ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও দুর্নীতি
দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের কাছে দুটি তদন্তের তথ্যপ্রমাণ দিয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে
বিষয়টি পূর্ণ তদন্ত করতে এবং যথাযথ বিবেচিত হলে দুর্নীতির জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি
দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
বিশ্বব্যাংক আরও বলেছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির যেসব প্রমাণ বাংলাদেশ
সরকারের কাছে দেওয়া হয়েছে, সরকার
চাইলে বিশ্বব্যাংক সেসব প্রতিবেদন ও চিঠি প্রকাশ করতে পারে। তবে সুপারিশমূলক রিপোর্টের
গোপনীয়তা বজায় রাখার ব্যাপারে বাংলাদেশসহ প্রত্যেক সদস্য দেশের কাছে বিশ্বব্যাংকের
দায়বদ্ধতা রয়েছে।
ঋণদাতা এই সংস্থাটি এ-ও জানিয়েছে, বিশ্বব্যাংকের অনুরোধ
করা সব পদক্ষেপ ও দুর্নীতির অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশি আইন, রীতিনীতি ও বিধি-বিধানের
সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। দুর্নীতির
বিষয়ে বিশ্বব্যাংক সরকারকে চারটি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। তার মধ্যে সরকার দুটি করতে
পারেনি।
বিশ্বব্যাংক আরও বলেছে, এ ধরনের ঘটনা বিশ্বের যেকোনো দেশে হলেই একই ধরনের
পরিণাম হতো।
দালালকে ধরে পুলিশে দিলেন যোগাযোগমন্ত্রী
যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আজ মঙ্গলবার সকালে হঠাত্ ঢাকার
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়ায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়
পরিদর্শন করেছেন।
পরিদর্শনের সময় মন্ত্রী অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে মোটরযান
পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আলমকে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করার নির্দেশ দেন। তিনি মোটরযান পরিদর্শক শেখ
মো. ইমরানকে কারণ দর্শানোর জন্য (শোকজ) বিআরটিএ চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনের সময় ওবায়দুল কাদের ইকুরিয়া বিআরটিএর সেবার মান
নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি জাহাঙ্গীর হোসেন (৫০) নামের এক দালালকে হাতেনাতে ধরে
পুলিশে সোপর্দ করেন।
ইকুরিয়া বিআরটিএর সহকারী পরিচালক শহীদুল্লাহ জানান, মন্ত্রী অনিয়মের অভিযোগে
দুই কর্মকর্তার একজনকে প্রত্যাহার ও অন্যজনকে কারণ দর্শানোর জন্য বলেছেন।
বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্তে ড. ইউনূসের হাত নেই
মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা বলেছেন, পদ্মা সেতুর অর্থায়নের ব্যাপারে
বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার সন্তোষজনক সমাধানে আসতে না পারায় তিনি নিরাশ। তবে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে বিশ্বব্যাংকের হাত গুটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তে ড.
মুহাম্মদ ইউনূসের কোনো হাত নেই। এটি বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের দ্বিপক্ষীয়
বিষয়।
আজ বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইলের মধুপুরে বন বিভাগের একটি প্রকল্প
নিয়ে অভিজ্ঞতা-বিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন। মধুপুর গড় এলাকার দোখলায় এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ড্যান ডব্লিউ মজীনা বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার-ব্যবস্থা বিষয়ে এ দেশের সব রাজনৈতিক দলের
সংলাপে বসা দরকার। সংলাপে বসে আলোচনার ভিত্তিতে সমঝোতায় আসা উচিত। রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে তিনি আশাবাদ
ব্যক্ত করেন।
বন বিভাগের এই প্রকল্পের নাম ‘রিভিজেটেশন অব মধুপুর ফরেস্ট
থ্রু রিহেবিলেশন ফরেস্ট ডিপেন্ডেন্ট লোকাল অ্যান্ড এথনিক কমিউনিটিস প্রজেক্ট’। বন বিভাগের এই প্রকল্পের কারণে বনের ওপর চাপ কমেছে
বলে মন্তব্য করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, দুই বছর ধরে এ বনে গাছ কাটা
বন্ধ রয়েছে। বন মামলাও হয়নি। সরকার মধুপুর বনকে শুধু
বাঁচানোর কথাই বলছে না, বরং বনাঞ্চলে বসবাসরত ৪০-৫০ হাজার বনবাসীর জন্য কাজ করছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অভিজ্ঞতা-বিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক
এম বজলুল করিম চৌধুরী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মধুপুরের বনজ সম্পদ জাতীয়
সম্পদ। তিনি সবার সহযোগিতায় মধুপুর বনাঞ্চলের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার তাগিদ
দেন। আদিবাসী-বাঙালি সবাইকে মধুপুর বনকে বিশ্বে একটি মডেল হিসেবে তুলে ধরতে মন্ত্রী
আহ্বান জানান।
সংবাদ: সংগ্রহ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন