পৃষ্ঠাসমূহ

শুক্রবার, ১৩ জুলাই, ২০১২

বাংলাদেশে আরও একটি নতুন গ্যাসক্ষেত্র?

ঢাকা, ১৩ জুলাই ২০১২:
বছর ঘুরতে না ঘুরতেই নতুন আরও একটি গ্যাস ক্ষেত্রের সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ। রাজধানী ঢাকার পাশ্ববর্তী জেলা কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার শ্রীকাইলে মিলেছে নতুন এই গ্যাসের ক্ষেত্রের সন্ধান। শ্রীকাইলের গ্যাস অনুসন্ধানকূপ তেকে গ্যাস বেরুচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কোম্পানি লিমিটেড বা বাপেক্সের গবেষকরা। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান হোসেন মনসুরও।

গবেষণা সম্পর্কে এখনই খোলাখুলি আলোচনা করতে রাজি না হলেও হোসেন মনসুর আশা করছেন; উত্তোলনযোগ্য হয়ে উঠলে এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে দিনপ্রতি ১৬/১৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে। তিনি জানান; কতটুকু গ্যাস পাওয়া যেতে পারে সেই সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে নতুন গবেষণা। ড্রিলিং স্টিম টেস্ট নামের ওই পরীক্ষায় জানতে পাওয়া যাবে; কতটা গ্যাস মজুদ আছে ওই গ্যাসক্ষেত্রটিতে; তারপরই কেবল তা উত্তোলনের পথে নামা যাবে।

পেট্রোবাংলাসূত্র জানিয়েছে; নতুন এই ক্ষেত্র থেকে উত্তোলনযোগ্য গ্যাস পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হলে বাংলাদেশের মোট গ্যাস ক্ষেত্র দাড়াবে ৮২টিতে। গ্যাসক্ষেত্রটিতে যে ধরনের গ্যাস মজুদ আছে তা শিল্প, সার ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে লাগানো যাবে বলেও জানিয়েছেন হোসেন মনসুর। তিনি বলেন; বর্তমানে এই ক্ষেত্র থেকে ১ হাজার ৭শ পিএসআইজি (প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে গ্যাসের চাপের পরিমান) চাপে ১৫ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো গ্যাস উত্তোলন সম্ভব।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান; নতুন এই গ্যাসক্ষেত্র বাংলাদেশের জন্য স্বস্তিদায়ক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি জানান; বর্তমানে বাংলাদেশে ২ হাজার ৭ শ থেকে তিন হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা আছে। তবে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ২ হাজার ঘনফুট!

তিনি আরও জানান; বাংলাদেশে এই মুহুর্তে গ্যাসের মজুদ ২০ দশমিক ৬২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ আছে। এর মধ্য থেকে ২০১১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ দশমিক ৭৪ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে! সেই হিসেবে মজুদও বেশি নেই। এ কারণেই নতুন নতুন গ্যাস ক্ষেত্র খোঁজার কাজে জোর দিয়েছে বাংলাদেশ। হোসেন মনসুর বলেছেন; দ্রুতই আরও কয়েকটি স্থানে গ্যাসের অনুসন্ধান কাজ শুরু হবে। সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলায় গ্যাসের সম্ভাব্যতা আছে বলে সেখানেই ভবিষ্যতে গ্যাস খোঁজার কথা উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠান দুটি। ভূতাত্বিক জরিপে তেমনই কিছু একটার সম্ভবনা দেখেছে বাপেক্সের কর্মকর্তারা।

বাপেক্স এবং পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, এ বছরের মে মাসে শ্রীকাইলে গ্যাস খোঁজার কাজ শুরুর পর গেলো ২৯ জুন পর্যন্ত ৩ হাজার ২শ ১৪ মিটার মাটি খনন করা হয়। সেখানেই চলে গ্যাস খোঁজার কাজ। তখনই বাপেক্স ও পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন; শ্রীকাইলে গ্যাস পাওয়া যেতে পারে।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ২৮ আগষ্ট নোয়াখালি জেলার সুন্দরপুরেও গ্যাসক্ষেত্র পাওয়া যায়। সেখান থেকে বর্তমানে ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে।
-পান্থ রহমান

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন