পৃষ্ঠাসমূহ

শুক্রবার, ২০ জুলাই, ২০১২

সমুদ্র বিলাস

সমুদ্র বিলাস তার বাড়ির নাম। এ বাড়িটি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলেছে নারিকেল জিঞ্জিরা নামে খ্যাত বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনকে। প্রতি মৌসুমে দেশি-বিদেশি হাজার হাজার পর্যটক ছুটে আসেন সমুদ্র বিলাসে; সেন্টমার্টিনের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখার আশায়। এটি অন্য দশটি দ্বীপের মতোই সাধারণ দ্বীপ ছিল।
এ দ্বীপের ভ্রমণকাহিনি ঘিরে তাঁর লেখা দুটি বই দারুচিনি দ্বীপ ও রুপালি দ্বীপ প্রকাশিত হওয়ার পরে দেশে-বিদেশের পর্যটকদের কাছে নারিকেল জিঞ্জিরা ভ্রমণে আগ্রহ বাড়ে। পাশাপাশি পর্যটনশিল্প বিকাশে তাঁর অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি। কারণ, এ দ্বীপে কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ সর্বপ্রথম ঢাকা থেকে এসে সমুদ্র বিলাস নামে একটি বাড়ি নির্মাণ করেছিলেন।

১৯৯৩ সালের ১৬ মার্চ সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা জোলেখা খাতুনের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে ২২ শতক জমি কেনেন হুমায়ূন আহমেদ। পরে ১৯৯৪ সালে তিনি একটি বাড়ি নির্মাণ করেন। ওই সময় তিনি স্থানীয় বাসিন্দা মো. শফিক ও মো. উসমানকে বাড়িটি দেখাশোনার জন্য মাসিক বেতনভুক্ত করে দায়িত্ব দেন। সেখানে তিনি একটি বাড়ি তৈরি করেছেন। পরে আমিও ১৯৯৮ সালে কিছু জমি কিনে সেখানে একটি কটেজ নির্মাণ করি। তাঁর অনুপ্রেরণায় ঢাকা থেকে শতাধিক ব্যক্তি ওই দ্বীপে জমি কিনে কটেজ নির্মাণ করে। ফলে পর্যটনশিল্প বিকাশের পাশাপাশি প্রবাল দ্বীপ পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে উঠেছে।
সেন্টমার্টিনের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা ফিরোজ আহমদ খান হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ করে বলেন, একমাত্র হুমায়ূন আহমেদের অনুপ্রেরণায় অবহেলিত এ দ্বীপটি পৃথিবীজুড়ে পর্যটকদের কাছে পরিচিতি লাভ করে। তিনি ১৯৯৪ সালে দ্বীপে বাঁশের বেড়া ও টিনশেডের একটি কটেজ নির্মাণ করে এ দ্বীপের গুরুত্ব বাড়িয়ে দেন। আজ তাঁর মৃত্যুতে পুরো দ্বীপবাসী মর্মাহত ও শোকাহত।
সেন্টমার্টিনের সমুদ্র বিলাসের তত্ত্বাবধায়ক মো. শফিক ও মো. উসমান বলেন, এ দ্বীপে হুমায়ূন আহমেদ ১৯৯৪ সালে প্রথম একটি বাঁশের বেড়া ও টিনশেডের বাড়ি নির্মাণ করেন। তখনো এ দ্বীপে অন্য কোনো কটেজ তৈরি হয়নি। তাই দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটক বাড়িটি একনজর দেখার পাশাপাশি ছবি তোলার জন্য ছুটে আসেন।
তাঁরা আরও বলেন, সর্বশেষ ২০১১ সালের ১৮ ডিসেম্বর নাট্যপরিচালক মাসুদ রানা, স্ত্রী শাওন, দুই সন্তান নিষাদ ও নিনিদসহ হুমায়ূন আহমেদ এসেছিলেন। বর্তমানে বাড়িটি ইজারা নিয়েছেন ব্যবসায়ী আবদুর রহমান, চিত্রনায়ক ফেরদৌস ও স্ত্রী শাওন।

আবদুর রহমান আরও বলেন, স্যারের অসংখ্য প্রকাশিত বই থেকে দারুচিনি দ্বীপ, কোথাও কেউ নেই, আমার আছে জল, হিমুর মধ্য দুপুর, মিসির আলী আপনি কোথায়, শ্রাবণ মেঘের দিন নামে ছয়টি কটেজ ও শঙ্খনীল কারাগার নামে একটি রেস্তোরাঁ তৈরি করা এবং ওই এলাকাকে নুহাশ পয়েন্ট নামকরণ করা হয়েছে।
সংবাদ: সংগ্রহ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন