পৃষ্ঠাসমূহ

শুক্রবার, ২৩ মার্চ, ২০১২

এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ফাইনাল বিশ্লেষণ

জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার ও নির্বাচক ফারুক আহমেদের মতে, পাকিস্তানের ইনিংসে করা বাংলাদেশের শেষ ওভার আর সাকিবের আউটই পরাজয়ের ক্ষেত্রে টার্নিং পয়েন্ট। তারপরও এশিয়াকাপ থেকে বাংলাদেশের অর্জনকে ছোট করে দেখতে রাজি নন তিনি। বরং এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখার প্রতি জোড় দেন সাবেক এই ক্রিকেটার। আর মাশরাফির মতে, বাংলাদেশ এখন বড় দল হওয়ার পথে।
ধারাবাহিকতা, এশিয়াকাপ হাতে না উঠলেও টুর্নামেন্ট জুড়ে বাংলাদেশের এটাই বড় অর্জন। ব্যাট হাতে ওপেনিং ব্যাটসম্যান তামীমের ২৫৩, সাকিবের ব্যাটে ২৩৭ রানের সঙ্গে ৬ উইকেট, নাসিরের ১৬৫ কিংবা নিজেকে ফিরে পাওয়া মাশরাফি মাঠ দাপিয়ে বেড়ানো। এসব মিলিয়েই বাংলাদেশ নামের সঙ্গে বিশ্বসেরারা জুড়ে দিয়েছেন একটি শব্দ ‘টিম-স্পিরিট’। একেই অর্জন হিসেবে দেখছেন দেশের সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটাররা।
পেইসার মাশরাফি বিন মর্তুজার মতে, বাংলাদেশ এ ধরনের অবস্থার মধ্যে পরে অভ্যস্থ নয়। তবে সুখের কথা হচ্ছে, আমরা এ রকম অবস্থার মধ্যে পড়তে শুরু করেছি। এবং এভাবেই আমরা নিজেদের তৈরি করে নিতে পারবো। প্রায় একই রকম মত জাতীয় সাবেক ক্রিকেটার এবং নির্বাচক ফারুক আহমেদের, বাংলাদেশের বড় অর্জন হলো ‘একটা দল’ হয়ে খেলতে পারা। বাংলাদেশের যে যোগ্যতা আছে সেটা তারা প্রমান করে দিয়েছে। এখন শুধু সেই ধারাবাহিকতাটুকু ধরে রাখতে হবে।
পরাজয়ের পোষ্টমর্টেম করতে গিয়ে সাবেক এই ক্রিকেটার ও নির্বাচক বলেছেন, ফাইনালের টার্নিং পয়েন্ট দুটি। পাকিস্তানের ইনিংসের শেষ ওভারে শাহাদাতের করা শেষ ওভার আর সাকিবের আউট। তবে তারপরও বাংলাদেশ যা পেয়েছে তাই অনেক।
তবে সাবেক এই নির্বাচকের মতে, এখন পেছনে ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই। বরং নিজেদের সেরা দল হিসেবে গড়ে তোলাটাই জরুরী। ফারুক বলেন, বড় দল হয়ে উঠতে হলে এমন কিছু দেখাতে হয় যা বাংলাদেশ দেখাতে পেরেছে।
আর বিশ্ব ক্রিকেটের কাছ থেকে পাওয়া প্রশংসাকে শক্তি হিসেবে নিয়ে নিজেদের শক্ত দল তৈরিতে ‘ধারাবাহিক’ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটাররা।

২.
এশিয়া কাপ দিয়েই ক্রিকেটবিশ্বে বড় শক্তি হয়ে ওঠার আভাস দিয়েছে বাংলাদেশ। মাত্র দুই রানের জন্য এশিয়া সেরার মুকুট না পেলেও যোগ্যতা প্রশ্নে এই দলটি পেয়েছে ‘একশ তে একশ’! কাপ না জেতার আফসোস থাকলেও ক্রিকেটাররাও মনে করেন, এই টুনর্মামেন্ট অনেক দিয়েছে বাংলাদেশকে। এখন জরুরী এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখা।
‘ইস্’ ... এশিয়া কাপের ফাইনাল শেষে কোটি বাংলাদেশির মুখে উচ্চারিত ধ্বনি! মাত্র দুই রানের আক্ষেপ! হতে হতেও পূরণ না হওয়া এক স্বপ্নগল্পের সমাপ্তি হলো কান্নায়। পুরো বাংলাদেশের মতো চোখের জলে ভেসেছেন ক্রিকেটের বীর সেনারাও।
চোখেমুখে হতাশার ছবি স্পষ্ট। তিন সাবেক বিশ্বসেরাদের টপকে এশিয়া সেরা হওয়ার স্বপ্নপূরণ হয়নি ঠিকই তবে, ওই চোখের জলেই লেখা হয়ে গেছে অন্য রকম এক ক্রিকেট কাব্য। যেখানে লেখা হয়েছে, ‘আন্ডারডগ’-এর খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসছে আরেকটি নাম, বাংলাদেশ। জাতীয় দলের ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজার মতে, আমরা নিজেদের সেরাটা দেখিয়েছি। যদিও জিততে পারি নাই তবে সেটা সম্ভবই হলেও হতে পারতো।
আর সাকিব আল হাসান মনে করেন, বাংলাদেশের এই অর্জনটা ধরে রাখতে প্রত্যেককে আলাদা আলাদা ভাবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। আগামী ছয় মাস বাংলাদেশের কোন খেলা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার নিজের অবশ্য সমস্যা নেই, ছুটি নেই তবে অন্যদের নিজেদের মতো করে প্র্যাকটিস করে যেতে হবে।
হেরে যাওয়ার কারণ এবং নিজের পারফরমেন্সের বিশ্লেষণ করতে গিয়ে মাশরাফি বলেন, আমি একটা সিঙ্গেলস নিয়ে সাকিবকে দিতে চেয়েছিলাম। তবে সেটা হলো না। দূর্ভাগ্য।
তবে তিনি মনে করেন, ঘরের মাটি আর চীরায়ত ক্রিকেটীয় ধারাবাহিকতার বিবেচনায় ফেভারিট হিসেবে খেলতে নেমেও অল্পতে হার মানা বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা মনে করেন, এই টুর্নামেন্ট তাদের দিয়েছে অনেক।
টুর্নামেন্ট জুড়ে ‘একটা দল’ হয়ে খেলা বাংলাদেশ মাঠে থাকবে না দীর্ঘ সময়। ধারাবাহিক হয়ে ওঠা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য তা কতটা সুখের সেটা নিয়েই এখন ভাবনা জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন