সমুদ্রসীমা নিয়ে
মিয়ানমারের সঙ্গে মামলায় আন্তর্জাতিক আদালতের রায় বাংলাদেশের পক্ষে আসার পর
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো ধন্যবাদ ফিরিয়ে নিয়েছে বিএনপি।
গোলটেবিল বৈঠকে বিএনপির
ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সমুদ্র আইন বিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর সঠিক তথ্য-উপাত্ত না
জেনেই তারা ধন্যবাদ জানিয়ে বসেছিলেন, যা এখন তা সংশোধন করা প্রয়োজন।
ফখরুল অভিযোগ করেছেন, জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই সরকার সমুদ্র জয়ের নামে উৎসব করছে। তিনি বলেন, সমুদ্র জয় যেভাবে সারাদেশকে নাড়া দিয়েছে, তাতে আমরা বিভ্রান্ত হয়েছিলাম। প্রথমে না জেনে সরলভাবে
সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলাম। পরে আমরা যখন বিষয়টি
জানলাম, তাতে মনে হয়েছে পুরোটাই শুভঙ্করের ফাঁকি। এখন আমাদের অবস্থান ঠিক করছি।
সমুদ্র আইন বিষয়ক
আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর ১৪ মার্চ পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি একে বিরাট বিজয় উল্লেখ করে বলেছিলেন, আমরা যা চেয়েছি, তা সবই পেয়েছি। বঙ্গোপসাগরে এক লাখ সাত হাজার বর্গকিলোমিটার চেয়ে আমরা পেয়েছি এক লাখ ১১ হাজার বর্গকিলোমিটার। অথচ তা হয়নি বলেই মনে করে বিএনপি। সেই সময় বিএনপি অভিনন্দনও জানায় সরকার ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে।
এই প্রসঙ্গ টেনে
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা
সংক্রান্ত রায়ে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সব কিছুর রাজনীতিকীকরণ করতে চাইনি বলেই বিরোধী দলীয় নেতা সংসদে সরকারকে
এবং আমি নিজে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকতাদের ধন্যবাদ জানিয়েছিলাম। আমরা মনে করেছি, সত্যিই সমুদ্র বিজয় হয়ে থাকলে সরকারের ধন্যবাদ
প্রাপ্য। কিন্তু পরে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ করে তথ্য-উপাত্ত
থেকে জানতে পেরেছি, এটা শুভঙ্করের ফাঁকি।
প্রধানমন্ত্রী যখন
২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা জয়ের জন্য আবার ভোট চাইলেন, তখনই সমুদ্র জয়ের আসল রহস্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেন ফখরুল। এ রকম একটি বিষয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার আগে
সরকারের আরো প্রস্তুতি নেওয়া উচিৎ ছিল বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
এই গোলটেবিল
আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন এম রেজাউল করিম চৌধুরী। এতে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আদালতের রায়টি মিয়ানমারের জন্য
ঐতিহাসিক এক বিজয়, বাংলাদেশ জন্য নয়।
আলোচনায় অংশ নেন দৈনিক আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যদের
মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমদ, সাংবাদিক আতাউস সামাদ, ফরহাদ মাজহার, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মাহবুব হোসেন, বর্তমান সভাপতি জয়নুল আবেদীন, অধ্যাপক আবদুর রব, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন,
প্রকৌশলী আ ন হ আখতার হোসেন, অধিকারের আদিলুর রহমান খান প্রমূখ।
সম্পাদনা: পান্থ রহমান
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন