পৃষ্ঠাসমূহ

বৃহস্পতিবার, ২৮ জুন, ২০১২

একসঙ্গে জন্মদিন এবং সামাজিক ব্যবসা দিবস পালন করলেন ডক্টর ইউনূস


গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের অংশ কমতে কমতে তিন শতাংশে দাড়িয়েছেনতুন করে বিনিয়োগ না করলে সরকারের অংশ আরও কমে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন নোবেলজয়ী ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসসামাজিক ব্যবসা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সেমিনারের সূচনা বক্তব্যে অধ্যাপক ইউনুস আবারও গ্রামীন ব্যাংককে নিয়ে গঠিত কমিশন নিয়ে নিজের শঙ্কার কথা উল্লেখ; গ্রামীন ব্যাংক বাঁচিয়ে রাখতে সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন
শুধুই টাকা বানানো নয় বরং কল্যান আর জনমুখি কাজের অংশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে ব্যবসা; শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ডক্টর ইউনুসের ভাষায় যার নাম সামাজিক ব্যবসাসমাজের উন্নয়নই হবে এই ব্যবসার মূলমন্ত্রমাইক্রোক্রেডিটের পর অধ্যাপক ইউনুসের এই নতুন চিন্তা এরই মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বলে দাবী সামাজিক ব্যবসায় সংশ্লিষ্টরাএরই মধ্যে বিশ্বের ১৯ দেশে সামাজিক ব্যবসা ছড়িয়ে পড়েছে বলেও দাবী তাদেরনিজের ৭২তম জন্মদিনের সঙ্গে সামাজিক ব্যবসায় আগ্রহী সেই দেশগুলোর অংশগ্রহনকারীদের সঙ্গে নিয়ে ডক্টর ইউনুস পালন করলেন তৃতীয় সামাজিক ব্যবসা দিবস
মার্ ন নভোচারী রন গারান বলেছেন; সামাজিক ব্যবসায় জোটবদ্ধরা অন্তত কোন রকম দূর্তি কিংবা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত নয়। তারা মানুষের উন্নয়নে কাজ করছে। আর আমি সে কারণেই তাদের সঙ্গে আছি। এ কারণেই আমি সামাজিক ব্যবসায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
মার্ন এই নভোচারী আরও বলেন; সামাজিক ব্যবসায় মনোনিবেশ করা মানুষ নিজের সঙ্গে মানুষ, সমাজেরও উন্নয়নে অংশীদিরিত্বের ভিত্তিকে কাজ করে। এ কারণেই ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের এই কনসেপ্টের সঙ্গে আমার একাত্মতা রয়েছে।
প্রচলিত ব্যবসার সঙ্গে সামাজিক ব্যবসার কোন বিরোধ নেই; অথচ প্রচলিত ব্যবসার মতো সামাজিক ব্যবসায়ীরা লভ্যাংশ নেবে না; অর্থ বানাতে মরিয়া হবে না; তাদের থাকবে সমাজের প্রতি কমিটমেন্ট; মোদ্দা কথা উদ্দেশ হবে কল্যানকরএনজিওর মতো দানমুখি কার্যক্রমের বদলে থাকবে অংশীদারিত্বের কর্মসূচীপ্রশ্নোত্তরে সামাজিক ব্যবসার এমনই ব্যখ্যা দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনুস
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস বলেন,  সামাজিক ব্যবসায় যারা আসবেন তারা কেউ ব্যবসা থেকে নিজেদের মুনাফা খুঁজবেন না বরং মানুষের কল্যানে কাজ করে যাবেন। তিনি বলেন, সামাজিক ব্যবসার নানা ধরনের হতে পারে। তবে মূল কাজ হবে, মানুষের সমস্যাগুলো নিয়ে কাজ করা। যা কিনা প্রচলিত ব্যবসার মধ্যে নেই। প্রচলিত ব্যবসায় মানুষ তাদের নিজেদের আখের গোছানোর কাজই কেবল করে থাকে। অথচ সামাজিক ব্যবসায় মানুষের উপকারে আসে এমন কাজ করা হবে; সেই সঙ্গে মানুষের অংশগ্রহণও থাকবে। তবে সেখান থেকে কেউ মুনাফা নেবে না।
সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে এই নোবেল বিজয়ী কথা বলেছেন; গ্রামীন ব্যাংক প্রসঙ্গেওতিনি বলেন; গ্রামীন ব্যাংকের অধিকাংশ মালিকানা নারী সদস্যদের; সরকারের অংশ সামান্যইডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, নোবেল জয়ী প্রতিষ্ঠানকে নষ্ট করতে দেওয়াটা ঠিক হবে না। সে কারণেই যারা সাধারণ মানুষ তাদের উচিত হবে সরকারকে বোঝানো। তিনি আরও বলেন; গ্রামীণ ব্যাংক গ্রামীণ নারীদের প্রতিষ্ঠান; এখানে তাদের ৯৭ভাগ শেয়ার রয়েছে। বাকি ৩ ভাগ সরকারের। কেননা শুরুতে সরকারের ২৫ ভাগ থাকলেও তারা নতুন করে কোন মুনাফা যোগ করেনি। অথচ গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ গ্রহীতারা প্রতিনিয়ত শেয়ার সংখ্যা বাড়িয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে সরকারের শেয়ার এক সময় আরও কমে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হয়ে যাবে।
ডক্টর ইউনূস বলেন; সামাজিক ব্যবসা মানুষের জন্য আর সে কারণেই এখানে যারা কাজ করবে তারা সরাসরি মানুষের উপকারের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। এর থেকে তারা বেতনও পাবে; যেভাবে অন্য দশটি প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন পায়। তবে প্রতিষ্ঠান থেকে যে লাভ হবে তার কোন অংশ তারা নেবে না।
ডক্টর ইউনুস আরও বলেন; সরকার চাইলে সামাজিক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করতে পারে তবে সরাসরি যুক্ত হওয়ার সুযোগ না দেওয়াই ভালোতার মতে; সরকারকে ঢুকতে দিলে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বাড়তে পারে; উদ্দেশ ব্যহত হতে পারে
পান্থ রহমান

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন