পাকিস্তানের
সর্বোচ্চ আদালত গতকাল মঙ্গলবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানিকে
প্রধানমন্ত্রী ও পার্লামেন্টের সদস্য পদে থাকার অযোগ্য ঘোষণা করেছেন। আদালত অবমাননার দায়ে তাঁকে দোষী
সাব্যস্ত করার দুই মাস পর সুপ্রিম কোর্ট এই আদেশ দিলেন। আদালতের এই রায়ের পর পাকিস্তান নতুন করে
রাজনৈতিক সংকটে পড়ল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
সুপ্রিম
কোর্টের গতকালের আদেশে বলা হয়, গিলানি
আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নন।
প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির বিরুদ্ধে
সুইজারল্যান্ডের আদালতে দায়ের হওয়া অর্থ পাচারের মামলা পুনরায় চালু করতে
সুইজারল্যান্ডের সরকারকে চিঠি লিখতে প্রধানমন্ত্রী গিলানিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন
সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু
গিলানি সেই নির্দেশ পালন না করায় গত ২৬ এপ্রিল তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সে সময় গিলানিকে শুধু প্রতীকী দণ্ড
দেওয়া হয়েছিল।
প্রধান
বিচারপতি ইফতিখার মোহাম্মদ চৌধুরী রায় পড়ে শোনান। আদেশে বলা হয়, ২৬ এপ্রিলের রায়ের বিরুদ্ধে এখনো কোনো
আপিল করা হয়নি। সুতরাং
ইউসুফ রাজা গিলানি পার্লামেন্টের সদস্য পদে থাকার অযোগ্য হয়ে গেছেন। ২৬ এপ্রিল থেকেই এই আদেশ কার্যকর এবং
প্রধানমন্ত্রীর পদ শূন্য বলে বিবেচিত হবে।
এর আগে
গতকাল ২৬ এপ্রিলের রায় সম্পর্কে জাতীয় পরিষদের স্পিকার ফাহমিদা মির্জার দেওয়া
রুলিং চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা আবেদনের ওপর শুনানি হয় প্রধান বিচারপতি ইফতিখার
মোহাম্মদ চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে। শুনানির পর আদালত স্পিকারের ওই রুলিং
অকার্যকর ঘোষণা করেন।
বিশ্লেষকেরা
বলছেন, আদালতের এই আদেশের পর আবারও রাজনৈতিক
সংকটে পড়ল পাকিস্তান। সুপ্রিম
কোর্টের রায়ের পর গিলানি কী পদক্ষেপ নেবেন, তা
এখনো পরিষ্কার নয়। এ ছাড়া
প্রধানমন্ত্রীর পদ শূন্য হওয়ার অর্থ সরকারের পতন কি না, তা-ও স্পষ্ট নয়।
ইসলামাবাদ
থেকে বিবিসির সংবাদদাতা জানান, আদালতের
গতকালের রায়ের পর ক্ষমতাসীন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) জ্যেষ্ঠ নেতারা
ইসলামাবাদে জরুরি বৈঠকে বসেছেন। প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি পিপিপির জরুরি বৈঠক আহ্বান করেন। প্রধানমন্ত্রী গিলানিও বৈঠকে উপস্থিত
রয়েছেন।
আদালত
অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী গিলানি বলেছিলেন, কেবল পার্লামেন্টই তাঁকে পদ থেকে অপসারণ
করতে পারে।
প্রতিবেদন: সংগ্রহ এবং সম্পাদনা: পান্থ রহমান
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন